জ্বরে সাপোজিটরি এর নাম ও ব্যবহার নিয়ম, শিশুদের জ্বরের সাপোজিটরি, সাপোজিটরি দাম

আপনি কি সাপোজিটরি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে চাচ্ছেন?

উত্তর যদি হয় হ্যা, তাহলে আজকের পোস্টটি শুধুমাত্র আপনার জন্যই। আজকের পোস্টটি শুরু থেকে শেষ অবধি পড়ুন তাহলে অনেক কিছু জানতে পারবেন।


সাপোজিটরি কি? আজকের পোস্টে জানবো আরও জানবো বাচ্চাদের জ্বরের সাপোজিটরি কখন দিতে হয় এবং জ্বরের সাপোজিটরি নাম সহ সাপোজিটরি ব্যবহার নিয়ম ও সাপোজিটরি দাম।
সাপোজিটরি দাম, জ্বরে সাপোজিটরি এর নাম ও ব্যবহার নিয়ম
সাপোজিটরি দাম, জ্বরে সাপোজিটরি এর নাম ও ব্যবহার নিয়ম

সাপোজিটরি কি?

সাপোজিটরি হলো একপ্রকার ঔষধ যা পায়ুপথে প্রয়োগ করা হয়। যখন কোন মানুষের মুখে ওষুধ খাওয়ানো অনিরাপদ হয় অথবা কোনভাবেই মুখ দিয়ে ঔষধ খাওয়ানো যায় না, যেমন রোগী অসুস্থতার জন্য অচেতন থাকলে অথবা শিশুর গলায় ওষুধ আটকে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকলে কিংবা রোগী বার বার বমি করলে এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হলে মূলত সাপোজিটরি ব্যাবহার করা হয়।


সাপোজিটরি পায়ুপথে যাওয়ার পরে গলে গিয়ে তার কাজ করতে শুরু করে। একপর্যায়ে সাপোজিটরি সম্পূর্ণ সক্রিয় হয়ে রোগ উপশম করে থাকে। এটি পায়ুপথের তাপমাত্রার প্রভাবে নিমিষেই গলে যায়।

বাচ্চাদের জ্বরের সাপোজিটরি

সাধারণত বাচ্চারা জ্বরে আক্রান্ত হয়ে পড়লে আমরা প্যারাসিটাম জাতীয় ট্যাবলেট অথবা সিরাপ সেবন করিয়ে থাকি। কখনো কখনো এমনও হয়ে থাকে যে বাচ্চার জ্বর কমার সম্ভাবনা নেই অর্থাৎ জ্বর দিন দিন বেড়েই চলেছে। এমতাবস্থায় বাচ্চারা ঔষধ খেতে পারে না। কখনো কখনো ঔষধ খেলেও সাথে সাথে বমি করে ফেলে দেয়।


জ্বর যখন ১০২ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত অতিক্রম করে তখন মূলত বাচ্চাদের জ্বর কমানোর জন্য আমরা সাপোজিটরি ব্যাবহার করি। বাচ্চারা অতিরিক্ত অসুস্থতার জন্য ঔষধ সেবন করতে না পারায় তাদের পায়খানার রাস্তা অর্থাৎ পায়ুপথ দিয়ে একপ্রকার ঔষধ দেওয়া হয় এটাই সাপোজিটরি নামে পরিচিত।

সাপোজিটরি কখন দিতে হয়

  • অতিরিক্ত জ্বরে ঔষধ খেতে না পারা
  • কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যায়
  • ব্যাথার প্রকোপ বেশি হলে
  • বমি সমস্যায় ভোগা
  • মুখ দিয়ে ঔষধ খেতে সমস্যা হলে
  • জ্বরের মাত্রা ১০২ ডিগ্রি ফারেনহাইট হলে
  • কোনভাবেই জ্বর না থামলে

জ্বরে সাপোজিটরি এর নাম

জ্বরের জন্য যে সাপোজিটরি রয়েছে সেটি হলো নাপা সাপোজিটরি [Napa Suppository]। এর মধ্যে অন্যতম সাপোজিটরিগুলো হলো।
  • Napa Suppository 125
  • Napa Suppository 250
  • Napa Suppository 500


সাপোজিটরি ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ব্যাবহার করা যাবে না। এটি ব্যাবহারের পূর্বে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। কেননা প্রেসক্রিপশন ছাড়া সাপোজিটরি ব্যাবহারে ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। আরও জেনে রাখা ভাল যে এক এক রোগের জন্য এক এক সাপোজিটরি ব্যাবহার করা হয়। 

নাপা সাপোজিটরি 500 এর ব্যবহার

সাপোজিটরি দেওয়া হয় সাধারণত মানুষের ওজন ও বয়স অনুযায়ী। কোন বাচ্চার বয়স ৫ বছর থেকে ১২ বছরের মধ্যে হলে বাচ্চাদের নাপা সাপোজিটরি ৫০০ এমজি ব্যাবহার করা হয় জ্বরের প্রতিষেধক হিসেবে। কখন কখন নাপা সাপোজিটরি ৫০০ ব্যাবহার করা হয় জানেন? যখন,
  • অতিরিক্ত জ্বরে ঔষধ খেতে পারে না
  • কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যায় পড়লে
  • ব্যাথার প্রকোপ বেশি হলে
  • বমি সমস্যায় ভুগলে
  • মুখ দিয়ে ঔষধ খেতে সমস্যা হলে
  • জ্বরের মাত্রা ১০২ ডিগ্রি ফারেনহাইট হলে
  • কোনভাবেই জ্বর না থামলে

নাপা সাপোজিটরি 250 এর ব্যবহার

সাপোজিটরি দেওয়া হয় সাধারণত মানুষের ওজন ও বয়স অনুযায়ী। কোন বাচ্চার বয়স ১ বছর থেকে ৫ বছরের মধ্যে হলে বাচ্চাদের নাপা সাপোজিটরি ২৫০ এমজি ব্যাবহার করা হয় জ্বরের প্রতিষেধক হিসেবে। এটি কখন ব্যাবহার করা হয় জানেন?
  • অতিরিক্ত জ্বরে ঔষধ না খেতে পারা
  • কোষ্ঠকাঠিন্য জনিত কারণে
  • ব্যাথার চিকিৎসায়
  • প্রচুর বমি করলে 
  • মুখ দিয়ে ঔষধ খেতে সমস্যা হলে
  • জ্বরের মাত্রা ১০২ ডিগ্রি ফারেনহাইট হলে
  • কোনভাবেই জ্বর না থামলে

নাপা সাপোজিটরি 125 এর ব্যবহার

সাপোজিটরি দেওয়া হয় সাধারণত মানুষের ওজন ও বয়স অনুযায়ী। কোন বাচ্চার বয়স ০ বছর থেকে ১ বছরের মধ্যে হলে বাচ্চাদের নাপা সাপোজিটরি ২৫০ এমজি ব্যাবহার করা হয় জ্বরের প্রতিষেধক হিসেবে। এটি কখন ব্যাবহার করা হয় জানেন?
  • অতিরিক্ত জ্বরে ঔষধ না খেতে পারা
  • কোষ্ঠকাঠিন্য জনিত কারণে
  • ব্যাথার চিকিৎসায়
  • প্রচুর বমি করলে 
  • মুখ দিয়ে ঔষধ খেতে সমস্যা হলে
  • জ্বরের মাত্রা ১০২ ডিগ্রি ফারেনহাইট হলে
  • কোনভাবেই জ্বর না থামলে

বাচ্চাদের জ্বর হলে করণীয়

  • প্রথম পর্যায়ে শারিরীক যত্ন নেওয়া
  • ঠিকমত খাবার খাওয়ানো
  • ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ
  • পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ সেবন করানো
  • নিয়মিত ওষুধ দেওয়া
  • ওষুধ খেতে না পারলে সাপোজিটরি ব্যাবহার করা
  • পরিমিত মাথায় পানি দেওয়া
  • ভেজা কাপড় দিয়ে গা মুছে দেওয়া

সাপোজিটরি [Suppository] কেন দেওয়া হয়?

সাপোজিটরি দেওয়া হয় তখনই যখন বাচ্চা ওষুধ খেতে পারে না, কোষ্ঠকাঠিন্য জনিত সমস্যার কারণে, প্রচুর জ্বরে আক্রান্ত হলে ইত্যাদি কারণে। আবার জ্বরের মাত্রা ১০২ ডিগ্রি ফারেনহাইট এর উপরে উঠে গেলেও সাপোজিটরি ব্যাবহার করা হয়।

পায়খানার সাপোজিটরি

যখন বাচ্চারা বা কোন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের পায়খানা করতে অসুবিধা হয় তখন যে সাপোজিটরি ব্যাবহার করা হয় সেটিই মুলত পায়খানা সাপোজিটরি। যারা সাধারণত কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগেন তাদের জন্যই মূলত পায়খানা সাপোজিটরি।

কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পেতে পায়ুপথে এক প্রকার ঔষধ ব্যাবহার করা হয়। ফলে সাপোজিটরি ঔষধ গলে গিয়ে পায়খানা নরম করে কোষ্ঠকাঠিন্য দুর করতে ভূমিকা রাখে। পায়খানা সাপোজিটরি ব্যাবহারের মূল উদ্দেশ্যই হলো পায়খানা নরম করা ও আরামদায়ক মলত্যাগে সাহায্য করা।

তবে অবশ্যই মনে রাখবেন পূর্ণ বয়স্কদের আর বাচ্চাদের সাপোজিটরি এক নয়। দুইজনেই সাপোজিটরি আলাদা আলাদা। এক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ ব্যতীত কোন প্রকার সাপোজিটরি ব্যাবহার করা ঠিক নয়।

সাপোজিটরি দাম

বাজারে নানান রকমের সাপোজিটরি পাওয়া যায় যেগুলোর আকৃতি ভেদে মূল্যও ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। সাধারণত যেকোনো সাপোজিটরি ৫০-১০০ টাকার ভিতরেই পাওয়া যায়। সাপোজিটরি কোয়ালিটি ও কোম্পানি অনুযায়ী মূল্য সামান্য কমবেশি তারতম্য হতে পারে এটা স্বাভাবিক।

আপনি চাইলে আপনার স্থানীয় বাজারের কোন ফার্মেসিতে গিয়ে সরাসরি সাপোজিটরি মূল্য জেনে নিতে পারেন। আপনি কোন ধরনের সাপোজিটরি ব্যাবহার করবেন তার উপর নির্ভর করবে আপনার সাপোজিটরি মূল্য।



সাপোজিটরি ব্যবহার নিয়ম

সাধারণত আমরা বেশির ভাগ মানুষই সাপোজিটরি ব্যাবহারের সঠিক নিয়ম জানি না। ফলে ভুলভাবে সাপোজিটরি ব্যাবহার করি এতে কাজ হয় না। আজকে সাপোজিটরি ব্যাবহারের সঠিক নিয়ম আমরা আপনাদের সাথে শেয়ার করবো ইনশাআল্লাহ।
  • সাপোজিটরি ব্যাবহারের পূর্বে অবশ্যই মলমূত্র ত্যাগ করে নিবেন।
  • পরিষ্কার হাত দিয়ে প্লাস্টিকের সাপোজিটরি প্যাকেট থেকে সাপোজিটরি বের করে নিতে হবে।
  • শুয়ে অথবা দাড়িয়ে ৯০ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেলে পজিশন নিতে পারেন এতে সুবিধা হবে।
  • এবার আস্তে আস্তে সাপোজিটরি পায়ুপথে ঢুকাতে হবে।
  • এমনভাবে ঢুকাতে হবে যেন সাপোজিটরি বাইরের দিকে বের হয়ে না আসে।
  • এবার দুই পা সম্পূর্ণ সোজা করতে হবে ও এভাবে মিনিট কয়েক অপেক্ষা করতে হবে যে সাপোজিটরি কাজ করা শুরু করতে পারে।
  • তবে অবশ্যই মাথায় রাখবেন সাপোজিটরি ব্যাবহারের পর ১ ঘন্টার মধ্যে টয়লেটে যাওয়া যাবে না এতে সাপোজিটরি সম্পূর্ণ গলে যাওয়ার আগেই বেরিয়ে আসতে পারে।
এভাবে সাপোজিটরি ব্যাবহার করলে আশা করা যায় সাপোজিটরি ব্যাবহারের সার্থকতা পাবেন।

কত ঘন্টা পর পর সাপোজিটরি দেয়া যায়

মূলত প্রতি ৪ থেকে ৬ ঘন্টা অন্তর প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের সাপোজিটরি দেওয়া যায়। তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করে সাপোজিটরি ব্যাবহার করতে হবে।

শিশুদের কত ঘন্টা পর পর সাপোজিটরি দেয়া যায়

শিশুদের মূলত প্রতি ৬ থেকে ৮ ঘন্টা অন্তর দেওয়া যায়। তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করে সাপোজিটরি ব্যাবহার করতে হবে।

জ্বর কত হলে সাপোজিটরি দিতে হবে

জ্বরের মাত্রা ১০২ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত গেলে সাপোজিটরি ব্যাবহার করা যায়। তবে এক্ষেত্রে সাপোজিটরি ব্যাবহারের পূর্বে অবশ্যই আপনাকে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।

শিশুদের জ্বরের সাপোজিটরি

শিশুদের জ্বরে মূলত তিন প্রকার সাপোজিটরি ব্যাবহার করা হয়। এগুলো মূলত,
  • Napa Suppository 125
  • Napa Suppository 250
  • Napa Suppository 500

Read More:

শিশুদের সাপোজিটরি ব্যবহারের নিয়ম

  • পরিষ্কার হাতে প্লাস্টিকের সাপোজিটরি প্যাকেট খুলতে হবে।
  • সাপোজিটরি সাবধানে আস্তে আস্তে শিশুর পায়ুপথে প্রবেশ করাতে হবে।
  • এমন ভাবে প্রবেশ করাতে হবে যেন বাইরে বেরিয়ে না আসে।
  • কাজটি সাবধানতার সহিত করতে হবে।

গ্লিসারিন সাপোজিটরি ব্যবহারের নিয়ম

সাধারণ সাপোজিটরির মতই গ্লিসারিন সাপোজিটরি ব্যাবহার করতে হবে। তবে ব্যাবহারের আগে অবশ্যই আপনাকে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ব্যাবহার করতে হবে।


পরিশেষে
যখন রোগী ওষুধ সেবনে ব্যর্থ হবে তখই সাপোজিটরি দিতে হবে। তবে সাধারণ অবস্থায় কোনমতেই সাপোজিটরি ব্যাবহার করা যাবে না। যা করবেন অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে করবেন। ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আর নিয়মিত দৈনিক ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইটে।

Globalic World

Globalic World Is One Of The Best Education And Technology Based Knowledge Sharing Site In Bangladesh.

Post a Comment

Previous Post Next Post