কাতিলা গাম খাওয়ার নিয়ম, কাতিলা গাম এর উপকারিতা ও অপকারিতা

কাতিলা গাম এর উপকারিতা ও কাতিলা গাম এর অপকারিতা সহ কাতিলা গাম দাম বিস্তারিত তথ্যই আজকের পোস্টের বিষয়বস্তু। অনেকেই কাতিলা গাম শুনেছেন তবে জানেন না কাতিলা গাম জিনিসটা কি, তাই আজকের পোস্টটি তাদের জন্যই। আজকের পোস্টে আমরা জানবো কাতিলা গাম কি, কাতিলা গাম খাওয়ার নিয়ম, কাতিলা গাম খাওয়ার উপকারিতা, কাতিলা গাম কোথায় পাওয়া যায় এবং কাতিলা গাম কি কাজ করে ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত সকল তথ্য।

কাতিলা গাম খাওয়ার নিয়ম, কাতিলা গাম এর উপকারিতা ও অপকারিতা
কাতিলা গাম খাওয়ার নিয়ম

কাতিলা গাম কি?

কাতিলা গাম হলো এক ধরনের শক্ত ও আঠালো বস্তু যা পানিতে ভিজিয়ে রাখলে ফুলে উঠে এবং নরম হয়ে যায়। এটি সাদা বা সামান্য লালচে রঙের হয়ে থাকে। কাতিলা গাম ইংরেজি হলো [Tragacanth Gum]। কাতিলা গাম এর বহু আঞ্চলিক নাম রয়েছে যেমন, কাতিরা গাম বা কাতিলা গম ইত্যাদি। এটি এক প্রকার পলিস্যাকারাইড যা মূলত উদ্ভিদের শিকড়ের রস শুকানোর মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়ে থাকে। কাতিলা গাম গন্ধহীন, স্বাদহীন এবং পানিতে দ্রবণীয় একটি কঠিন পদার্থ যা ঔষধি গুণাগুণে ভরপুর।


কাতিলা গাম

কাতিলা গাম এর উপকার এবং কাতিলা গামের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো। প্রতি ১০০ গ্রাম কাতিলা গামে যে যে পুষ্টিগুণ যে যে পরিমাণে রয়েছে তা হলো।

  • ক্যালোরি রয়েছে ৭০ কিলো ক্যালোরি।
  • কার্বোহাইড্রেট রয়েছে ৩৫ গ্রাম।
  • ফাইবার রয়েছে ৩০ গ্রাম।
  • হাইড্রেটস রয়েছে ৫ গ্রাম।
  • চর্বি রয়েছে ০ গ্রাম।
  • সোডিয়াম রয়েছে ৯ গ্রাম।


কাতিলা গাম কি কাজ করে

  • পায়খানা নরম ও ক্লিয়ার করতে সাহায্য করে।
  • শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে।
  • পাকস্থলীর কার্যাবলী বৃদ্ধি করে।
  • চুল পড়া বন্ধ করে।
  • যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
  • দ্রুত বীর্যপাত বন্ধ করে।
  • মিলনে সময় বাড়ায়।
  • কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।


কাতিলা গাম কি কি কাজে ব্যবহার হয়?

  • টুথপেষ্ট তৈরিতে ব্যবহার করা হয়।
  • হ্যান্ড লোশন তৈরিতে ব্যবহার করা হয়।
  • দাঁতের চিকিৎসায় ব্যবহার হয়।
  • নানান রকমের জেলি তৈরিতে ব্যবহার হয়।
  • সালাদ ড্রেসিং এ ব্যবহৃত হয়।
  • খাবার তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
  • বিভিন্ন ধরনের পানীয় তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।


কাতিলা গাম খাওয়ার নিয়ম

কাতিলা গাম কিভাবে খেতে হয় বা কাতিলা গাম খাওয়ার নিয়ম কি অনেকেই জানেন না। কাতিলা গাম খাওয়ার নিয়ম নিচে দেওয়া হলো।

  • কাতিলা গাম পানিতে ভিজিয়ে রাখুন।
  • এটি ফুলে উঠলে এবং নরম হয়ে গেলে এতে চিনি অথবা গুড় মিশিয়ে নিন।
  • আপনি চাইলে স্বাদ বৃদ্ধি করার জন্য লেবুর রস মিশিয়ে নিতে পারেন।
  • এবার কাতিলা গাম এর সম্পূর্ণ দাওয়াই ভালোভাবে নেড়েচেড়ে মিশিয়ে নিন।
  • এবার কাতিলা গাম খাওয়ার জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত।
  • তবে অবশ্যই আপনাকে প্রচুর পরিমাণ পানি পান করতে হবে নয়তো ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।


Read More:

কাতিলা গাম এর উপকারিতা

কাতিলা গামের উপকারিতা সম্পর্কে আপনারা অনেকেই অবগত নয়। তাই এখানে কাতিলা গাম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত সকল তথ্য আলোচনা করবো।

  • শরীর শীতল করে কাতিলা গাম।
  • কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে কাতিলা গাম।
  • ত্বকের যত্নে ভুমিকা পালন করে কাতিলা গাম।
  • চুলের যত্নে ভুমিকা পালন করে কাতিলা গাম।
  • যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে কাতিলা গাম।
  • দ্রুত বীর্যপাত রোধ করে কাতিলা গাম।
  • মিলনে সময় বাড়াতে সাহায্য করে কাতিলা গাম।
  • পায়খানা ক্লিয়ার করে কাতিলা গাম।


ক) শরীর শীতল করে কাতিলা গাম

শরীরের প্রশান্তি আনতে এবং শরীরকে নমনীয় ঠান্ডা রাখতে কাতিলা গাম অতুলনীয়। এই প্রচন্ড গরমে আপনি ২ বেলা নিয়মিত কাতিলা গামের মিক্স খেতে পারেন। প্রথমে পানিতে কাতিলা গাম ভিজিয়ে রাখুন এবং কাতিলা গাম ভিজে ফুলে নরম হয়ে এলে এতে পরিমাণ মতো চিনি মিক্স করে খেতে পারেন। তবে স্বাদ বৃদ্ধির জন্য লেবুর রস ব্যবহার করতে পারেন। আবার চিনির পরিবর্তে মধু, গুর অথবা তালমিছরি ব্যবহার করতে পারেন। এই অস্বস্তিকর গরমে কাতিলা গাম হতে পারে আপনার আশার আলোর প্রদীপ।


খ) কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে কাতিলা গাম

অনেকেই কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যায় ভুগে থাকেন তাই তাদের জন্য কাতিলা গাম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কাতিলা গাম আপনার পেটের খাবার হজমে ব্যাপক সাহায্য করবে এবং বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয়। ফলে মলত্যাগ নিয়মিত ও আরামদায়ক হয়। আবার পাকস্থলীর কার্যাবলী বৃদ্ধি করতে কাতিলা গাম অসাধারণ ভুমিকা পালন করে থাকে।


গ) যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে কাতিলা গাম

যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি ও যৌন জীবন সুখময় করতে কাতিলা গাম ব্যাপক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পাতলা বীর্য ঘন করতে এবং অধিক সময় মিলনের জন্য  মহৌষধ হিসেবে কাজ করে কাতিলা গাম। আপনি নিয়মিত পরিমাণ মতো কাতিলা গাম সেবনে মাত্র ১৫ দিনে ফলাফল পাবেন আশা করছি।


কাতিলা গাম এর অপকারিতা

কাতিলা গামের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে কিছু। কাতিলা গামের অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানবো এবার।

  • যেহেতু কাতিলা গাম আঠা জাতীয় পদার্থ তাই এটা অন্য কোন ওষুধের সাথে সেবন করলে পেটের মধ্যে খাদ্যনালীর সাথে আটকে যেতে পারে।
  • একই সময়ে ঔষধ এবং কাতিলা গাম খেলে ঔষধের কার্যকারিতা নষ্ট হতে পারে।
  • তাই ঔষধ সেবনের কমপক্ষে ১ থেকে ১.৫ ঘন্টা পরে কাতিলা গাম খাওয়া যেতে পারে।
  • অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে আপনার পাকস্থলীর বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।


কাতিলা গাম কোথায় পাওয়া যায়

অনেকেই চিন্তা করেন কাতিলা গাম কোথা থেকে কিনবো বা কাতিলা গাম কোথায় পাওয়া যায়। কাতিলা গাম মূলত আপনার স্থানীয় বাজারের শপ থেকে মাত্র ১০০ টাকার মধ্যে ১০০ গ্রাম কাতিলা গাম পেয়ে যাবেন। আর আপনি যদি অনলাইন থেকে ক্রয় করতে চান তাহলে দারাজ অথবা এজাতীয় জনপ্রিয় অনলাইন শপিং প্লাটফর্ম থেকে কাতিলা গাম ক্রয় করতে পারবেন।


আরও পড়ুন –


কাতিলা গাম দাম

কাতিলা গামের দাম কত টাকা অনেকেই জানেন না। সাধারণত কাতিলা গাম এর দাম ১০০ গ্রাম সর্বোচ্চ ১০০ টাকা। আপনি যদি একটু বেশি ক্রয় করেন অথবা স্থানীয় বাজারে পরিচিত কোন শপ থেকে ক্রয় করেন সেক্ষেত্রে আরো সাশ্রয়ী মূল্যে কাতিলা গাম ক্রয় করতে পারবেন।


পরিশেষে –

কাতিলা গাম উইকিপিডিয়া তথ্য অনুযায়ী আজকের পোস্টটি সাজানোর চেষ্টা করেছি। কাতিলা গামের উপকারিতা কি এ সম্পর্কে বিস্তারিত আপনারা জেনেছেন এই পোস্টে। তাছাড়াও আর অনেক তথ্য জেনেছেন কাতিলা গাম সম্পর্কে। তবে আপনারা কাতিলা গাম বা কাতিলা গাম পাউডার খাওয়ার সময় অবশ্যই পরিমিত খাবেন। এতে স্বাস্থ্য ঝুঁকি কম, তবে অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। কাতিলা গাম এর উপকার যেমন রয়েছে তেমনি অপকার রয়েছে। তাই পরিমাণ মতো খাওয়াই শ্রেয়। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।

Globalic World

Globalic World Is One Of The Best Education And Technology Based Knowledge Sharing Site In Bangladesh.

Post a Comment

Previous Post Next Post